চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার


চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার প্রাচীন কাল থেকেই অনেক মানুষ ব্যবহার করে আসতেছে। বছরের পর বছর চুলের যত্নে কারী পাতার ব্যবহার বেড়েই চলেছে। কারি পাতা বিভিন্ন ভিটামিনের উৎস হিসেবে পরিচিত। চলুন জেনে নেই এই আধুনিক যুগে ঘরোয়া উপায়ে কারি পাতার ব্যবহার।



চুল পড়া সমস্যা প্রতিদিনের নতুন কোন ঘটনা নয়। চুল বেঁধে রাখলেও ঝরে পড়ে বা গোসলের পর চুল চিরুনি করলেও চুল ঝরতেই থাকে। বিভিন্ন ধরনের তেল কিংবা ভিটামিন ব্যবহার করেও অনেকের রোধ হয় না। আজকে আমরা এই আর্টিকেলে চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করব।

পেজ সূচিপত্রঃচুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার অনেকেই জানে না। তাই আপনি কিভাবে ব্যবহার করবেন তা আলোচনা করব। ভারতীয় উপমহাদেশে এই কারি পাতা অনেকে খাবার হিসেবে আবার কেউ কেউ আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এই আর্টিকেলে চুলের যত্নে কিভাবে কারি পাতা ব্যবহার করা হবে তা আলোচনা করব।

চুলের বৃদ্ধি, চুলের গুণগতমান রক্ষা করতে, চুলকে ঝলমলে , চুলে রং পেতে কারি পাতার আপনি কি ভাবে ব্যবহার করবেন এবং এটি কিভাবে কখন ব্যবহার করবেন তা বলব। কারি পাতায় রয়েছে বিভিন্ন উপাদানের সমষ্টি। যেমনঃ ভিটামিন বি , ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই। চুল ফাটা থেকে শুরু করে চুল শক্ত ও  করতে এই কারি পাতা কার্যকরী ভূমিকা রাখে ।

চুুল ঘন করতে কারি পাতার ব্যবহার

কারি পাতার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই ও বিভিন্ন খনিজ পদার্থের উপাদান। যা চুলের গুণগতমান রক্ষা করতে সহায়তা করে থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এটি চুল ঘন করতে ব্যাপক অবদানে রাখে। যদি ঠিকমতো ব্যবহার করা যায় তবে চুল ঘনত্ব বাড়ে। চুলের যত্নে কারি পাতা ব্যবহার অনেক।

চুল ঘন করতে কারি পাতার তেল ব্যবহার করতে পারেন। অথবা তেলের মধ্যে কিছু কারি পাতা দিয়ে মিক্সড করে নিয়ে চুলে যেতে পারেন। এটি চুলে ৩০ মিনিট রাখতে পারেন তারপর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। তাছাড়া কারি পাতার সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে হালকা গরম করে 15 থেকে 20 মিনিট চার থেকে পাঁচ দিন পর পর মাসাজ করলে চুলের ঘনত্ব বাড়ে।

খুশকি দূর করতে ঝলমলে  পেতে কারি পাতার ব্যবহার

চুলের খুশকি নিত্যদিনের একটি সমস্যা। এটির জন্য অনেকেই বিরক্ত বোধ করে। আবার চুলে খুশকি থাকার কারণে প্রতিনিয়তন চুলের ভেতরে ময়লা থাকে। যার কারণে রোগেরও সৃষ্টি হতে পারে। তাই অনেকেই চাই এই খুশকি কি চিরদিনের দূর করতে । কারি পাতায় যেহেতু বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে তাই এটি খুশির দূর করতে চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার  কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

যদি আপনি তিন থেকে চার দিন পরপর গোসলের এক ঘন্টা আগে কারি পাতা গুড়া করে মেথির গুড়ার সাথে ভালো করে মিক্সড করে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট দিয়ে রাখেন তারপরে শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এইভাবে কয়েক সপ্তাহ করলে চুলের ভিতর থেকে খুশকি দূর হবে এবং আপনার চুল ঝলমলে হয়ে উঠবে।

চুল বৃদ্ধি ও চুলের ফাটা রোধে পাতার ব্যবহার

চুলের জন্য কারি পাতার ব্যবহার অনেকেই করে থাকে। চুল বৃদ্ধি ও চুল ফাটা রোধে এই কারি পাতার ব্যবহার অনেক উপকারিতা রয়েছে। কারি পাতার মধ্যে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা মাথা ত্বকের ভিতরে ঢুকে চুল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে। তাছাড়া  রয়েছে বিটা ক্যারোটিন যেটি সাহায্যে মাথার চুলকে আরো বৃদ্ধি করতে কার্যকর ভূমিকা।

যেহেতু কারি পাতার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল খনিজ পদার্থ। আপনি যদি চুলের ফাটা রোধ করতে চান তাহলে এই কারি পাতার সাথে কাঁচা আমলকি বেটে গোসলের আগে কারি পাতা ও কাঁচা আমলকি ভালো করে মিক্সড করে ২০ থেকে ৩০ মিনিট মাথায় দিয়ে রাখবেন। তারপর গোসলের সময় চুলের শ্যাম্পু করার পর লেবুর রস দিয়ে ধুয়ে নিতে পারেন। যদি আপনি নিয়মমাফিক করেন তবে এই সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে পারেন।

চুলের যত্নে কারি পাতা ও পেঁয়াজ রস ব্যবহার

চুল মানুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে থাকে। সুন্দর চুল ও ঝলমলে পেতে সকলেই চাই। কিন্তু বিভিন্ন কারণে বা পানিতে আয়রন থাকার কারণে চুলের ভিতর খুশকি হয়ে থাকে এমনকি চুলের গড়া নরম হয়ে যায় ও চুল ফাটতে শুরু করে। অনেক কিছু ব্যবহারের পরেও যেন চুলের সমস্যা দূর হয়না।চুলের যত্নে কারি পাতা ও পিয়াজ রস অনেক কার্যকারী উপাদান।

পিয়াজ রস এ আছে সিলিকা ,সালফা,ভিটামিন এ এবং কারি পাতায় ও আছে বিভিন্ন উপাদান এর সমষ্টি। কয়েকটি কারি পাতা বেটে ও পিয়াজ রস করে ভালো করে বেলেন্ড করে চুলে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রাখতে হবে।এটি চুল পড়া রোধ করে,চুলের গোঁড়া শক্ত করে । তাছাড়া ঝলমলে চুল পেতে পেঁয়াজ রস কারি পাতার তেল অনেক উপকার। কিছু কারি পাতা নারকেল তেলের সাথে গরম করে দুই থেকে তিন চামচ পেঁয়াজ রস করে দিতে পারেন।

কারি পাতার তেলের উপকার

কারি পাতার তেল চুলের যত্নে অনেক উপকারী একটি তেল। এই তেলের ব্যবহার অনেকেই জানেনা। বা কিভাবে এটি তৈরি করতে হয় ও চুলে ব্যবহার করতে হয়। এই কারি পাতার তেল চুলের গোড়া করে শক্ত ও চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে। কারি পাতার তেলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেল যা চুলে স্বাস্থ্য রক্ষা করতে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে থাকা আইরন, ক্যালসিয়াম, বিভিন্ন ভিটামিন চুলকে হেলদি করে তোলে।

সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন গোসলের আধা ঘন্টা পূর্বে এই তেল দিতে হবে। কয়েকটি কারি পাতা ও এক চামচ নারিকেল তেল নিয়ে গরম করতে হবে এবং ১০ মিনিট ধরে ঠান্ডা করে নিতে হবে। এরপরে এই তেলের সাথে  ভিটামিন ক্যাপসুল দিয়ে ভালো করে মিক্সড করে নিতে হবে। তারপর পাঁচ মিনিট ধরে চুলে গড়া থেকে আগাল পর্যন্ত মাসাজ করে নিতে হবে। গোসলের সময় দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলতে হবে। তাহলে আপনার চুল হয়ে উঠবে সিল্কি ও ঝলমলে।

আর্টিকেলে শেষ কথা

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। আপনার চুল কে লম্বা, ঘন ও মজবুত পেতে হলে এই কারি পাতা ব্্যবহার করতে হবে বিভিন্ন উপায়ে।কারি পাতার হেয়ার প্যাক নিয়মিত ব্যবহার করতে পারলে চিরতর খুশকি ও দূর হবে।তাছা কারি পাতার হেয়ার প্যাক এর সাথে নিয়মিত টক দই ব্যবহার করলে চুলে চুলের ভিতরে জমে থাকা ময়লা দূর হয়ে যায় ও চুল হয়ে ওঠে সিল্কি।

এই আর্টিকেলে আলোচিত প্রাচীন রহস্য গুলো কে আপনার চুলের যত্নে অন্তর্ভুক্ত করুন এবং কারি পাতার শক্তির অভিজ্ঞতা নিন। কারি পাতা বেশিরভাগ লোকের জন্য নিরাপদ তবে কারো কারো সংবেদনশীল ত্বক থাকার কারণে জ্বালাপোড়া করে এক্ষেত্রে তাদের এটি এড়িয়ে চলা উচিত।  চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করে থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url